শিশুটি খেলাধুলা, ছোটাছুটি সবই করে, আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ। কিন্তু একদম খায় না বললেই চলে, সারা দিনে পছন্দের একটা বা দুটো আইটেম-ই শুধু খেতে চায়। খাবারে বড্ড বেশি বাছবিচার। মায়ের অবস্থা কাহিল। এ ধরনের শিশুকে বলা হয় ‘পিকি ইটার’।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব শিশুর মা-বাবা অতি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। শিশু স্বাভাবিক খাবার খায় না কিন্তু ক্রেকারস, চিপস, চুইংগাম, চিকেন ফ্রাই, চকলেট—এসবে বেশ আসক্তি আছে। কিন্তু দৈনন্দিন ভাত-তরকারি দেখলেই পালিয়ে বেড়ায়। এসব বাচ্চা মা-বাবার একমাত্র বা দ্বিতীয় সন্তান হয়ে থাকে। আজকের যুগে এ রকম শিশুর সংখ্যা কম নয়।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের শিশুর বয়স এক থেকে তিন বছরের মধ্যে বা কিছু বেশি, মা-বাবার একমাত্র সন্তান বা দ্বিতীয় সন্তান, গত ২৪ ঘণ্টায় সে বেশ তৎপর ছিল। তার ঘুম স্বাভাবিক, অন্য কোনো শারীরিক অসুস্থতার চিহ্ন নেই। শিশুর বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক বিকাশ হচ্ছে। হৃৎস্পন্দন, শ্বাসপ্রশ্বাস, রক্তচাপ, তাপমাত্রা স্বাভাবিক। গ্রোথ চার্ট মিলিয়ে তার ওজন, উচ্চতা, মাথার বেড়, উচ্চতা ও ওজনের ভারসাম্য সূচক বিএমআই মানও স্বাভাবিক। শিশুর রক্তশূন্যতা বা পানিস্বল্পতা নেই। এর অর্থ হলো শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ-স্বাভাবিক; তার বৃদ্ধি ও বিকাশ যথাযথ আছে কিন্তু তারপরও মা-বাবার অভিযোগ, বাচ্চা একদম খায় না। এখন কী করা!
* মাকে শিশুর খাবার ও খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে
* শিশুকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই
* প্রতিটি শক্ত খাবার শিশুর জন্য নতুন। তাই তার রং, গঠন, স্বাদ এসব বুঝতে তাকে সময় দিতে হবে
* ঘরে তৈরি পারিবারিক খাবার পছন্দ অনুযায়ী খেতে দিন, উৎসাহ দিন, একসঙ্গে সবার সঙ্গে খেতে দিন। যখন-তখন চিপস, জুস, ড্রিংকস এসব খেয়ে পেট ভরিয়ে ফেলার সুযোগ দেবেন না
* ওর পছন্দ বুঝতে চেষ্টা করুন। কোনো শিশু হয়তো মিষ্টি খাবার পছন্দ করে, কেউ নোনতা। রুচি অনুযায়ী খাবার প্রস্তুত করুন।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ